
লামিয়া ইসলাম নওশীন
স্টাফ রিপোর্টার
নোয়াখালীর সুবর্ণচরের চরকাজী মোকলেস গ্রামে টানা তিনদিন ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভারি বৃষ্টিপাত ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে পুরো এলাকা অন্ধকারে ডুবে গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, এই এলাকায় সামান্য বাতাস বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতেই বিদ্যুৎ চলে যায়, এবং তা ফিরতে ৩ থেকে ৪ দিন সময় লেগে যায়। তবে আবহাওয়া একটু খারাপ হলে সেই সময় বেড়ে দাঁড়ায় ৫ থেকে ৬ দিনে।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, বিদ্যুৎ এখানে যায় না—বরং মাঝেমধ্যে আসে। নিয়মিত লোডশেডিং এখন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। এই ঘনঘন লোডশেডিং ও বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্নতার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়ছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী ও রেস্তোরাঁ মালিকরা।
চরকাজী মোকলেস বাজারের কয়েকজন দোকানদারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের কারণে ফ্রিজে সংরক্ষিত খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এতে রেস্তোরাঁ মালিকদের অনেক আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এক রেস্তোরাঁ মালিক জানান, “প্রায় প্রতিদিনই কিছু না কিছু খাবার ফেলে দিতে হয়। এতে আমরা যেমন ক্ষতির মুখে পড়ছি, তেমনি ক্রেতাদের সেবাও ঠিকমতো দিতে পারছি না।”
এদিকে বিদ্যুৎ না থাকায় শিক্ষার্থীরাও বিপাকে পড়েছে। অনলাইনে পাঠগ্রহণ কিংবা রাতের পড়াশোনা—সবই বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এছাড়া মোবাইল ফোন চার্জ, পানির মটর চালানো, ঘরের বাতাস চলাচল—সবই যেন স্থবির হয়ে পড়েছে।
গ্রামবাসীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সারাদেশে উন্নয়ন হচ্ছে, অথচ আমরা আজও বিদ্যুৎ সমস্যায় ভুগছি। প্রতি বছরই এমনটা হচ্ছে, কিন্তু কোনো স্থায়ী সমাধান হচ্ছে না।”
তারা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, “আমাদের এ অবস্থা থেকে মুক্তি দিন। ঘনঘন লোডশেডিং যেন কমে এবং দুর্যোগেও দ্রুত বিদ্যুৎ পুনরায় চালু হয়—এই দাবি আমাদের।”
নোয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সংশ্লিষ্টদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে এলাকাবাসী আশা প্রকাশ করেছেন, কর্তৃপক্ষ এই সমস্যা আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। না হলে ভোগান্তি আরও বাড়বে, এবং ক্ষতির পরিমাণও বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে।